৩ মিলিয়ন ডলার গচ্চা: শেখ হাসিনার নোবেল জুটেনি ফোনও আসেনি

বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য নোবেল পুরস্কার পেতে তদীয় পুত্র সজীব জয়ের লবিষ্ট নিয়োগ আর আর দেশে বিদেশে সুবীর-কবির চক্রের অব্যাহত প্রচারণা ভেস্তে গেছে। গত একমাসে গচ্চা গেছে প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য নোবেল পুরস্কার পেতে তদীয় পুত্র সজীব জয়ের লবিষ্ট নিয়োগ আর আর দেশে বিদেশে সুবীর-কবির চক্রের অব্যাহত প্রচারণা ভেস্তে গেছে। গত একমাসে গচ্চা গেছে প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার।

শেখ হাসিনার জন্য নোবেল পুরস্কার যোগাড় করতে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রায় তিন মিলিয়ন ডলারের একটি বাজেট নেয়া হয়েছিল। 

সূত্রমতে, এই বাজেটের যোগান দেয় শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এবং খালা শেখ রেহানা। এরপর পরিকল্পনা অংশ হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল তিনজন লৰিষ্ট যাদের কাজ ছিল নোবেল কমিটির কাছে শেখ হাসিনার নামটি উপস্থাপন করা। 

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার পক্ষে প্রচারণা চালানোর জন্য নিয়োগ দেয়া হয় সুবীর ভৌমিক নামে কলকাতার এক সাংবাদিককে।

 বাংলাদেশে প্রচারণা চালানোর দায়িত্ব দেয়া হয় নিউজ পোর্টাল “বাংলা ইনসাইডার” এর সৈয়দ বোরহান কবিরকে। 

দেশে বিদেশে প্রচারণা চালানোর জন্য বরাদ্দ হয় এক মিলিয়ন ডলার এবং বাকি দুই মিলিয়ন বরাদ্দ করা হয় লবিষ্ট নিয়োগের জন্য। লবিষ্ট নিয়োগের দায়িত্বে ছিলেন শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। 

তবে এতো কিছু করেও নোবেল পেলেন না শেখ হাসিনা এমনকি জানা গেছে শেখ হাসিনার নাম নোবেল কমিটির কোথাও কোনো পর্যায়ে আলোচনায়ও আসেনি। 

এ নিয়ে শুক্রবার সুবীর ভৌমিকের সঙ্গে শুক্রবার বোরহান কবিরের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। ফোন আলোচনায় বোরহান বলেন, আমরা আমাদের করেছি।, 

কিন্তু লবিস্ট নামে যাদেরকে নিয়োগ করা হয়েছে, তারা আসলে প্রকৃত অর্থে লবিষ্ট নয়, তারা আসলে ছিল জুয়াড়ি।

এ সময় সুবীর ভৌমিক হাসতে হাসতে বোরহান কবিরকে বলেন, “দাদা, নোবেল কি গাছে ধরে? 

জুয়াড়িদের লবিষ্ট নিয়োগ করে আর তোমার বাংলা ইনসাইডার-এর মতো অনলাইন প্রচারণায় কি নোবেল আদায় করা যায়? তোমার দেশের মানুষই তো শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।”

এদিকে, দেশের অনেকেই মনে করেন, শেখ হাসিনার মাথায় এমনিতেই দোষ আছে। ২০০০ সালে উচ্চআদালতও বলেছে, শেখ হাসিনা রং হেডেড লেডি। 

এই পাগলের পাগলামি আরো উস্কে দিয়েছেন রংপুরে শিবিরের সাবেক নেতা সৈয়দ বোরহান কবির। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার কারণে শেখ হাসিনা নোবেল পাচ্ছেন, এমন শোরগোল তুলে দেয় সুবীর-কবির চক্র। 

নোবেলের জন্য লবিং করার নামে সুবীর-কবির চক্র দেশে বিদেশে গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার পক্ষে লেখার অজুহাতে কোটি কোটি টাকা খরচ করতে শুরু করে।

 “শেখ হাসিনা নোবেল পাচ্ছেন” এই জাতীয় সংবাদ প্রতিদিনই বোরহান কবির তার নিউজ পোর্টাল “বাংলা ইনসাইডার ” এ প্রকাশ করতো আর সেই সব নিউজ ফলাও করে প্রচার করতো অন্যান্য পত্র পত্রিকায়। 

সূত্রমতে, সেপ্টেম্বর মাসের দশ তারিখের পর প্রতিরাতেই “বাংলা ইনসাইডার” কার্যালয় কিংবা বিভিন্ন হোটেল ক্লাবে চলতো মদের আড্ডা। 

ওই আড্ডা থেকেই শেখ হাসিনাকে নোবেল প্রাইজ দেয়ার একেকটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হতো।

তবে শেখ হাসিনাকে নোবেল প্রাইজ দেয়া নিয়ে সুবীর-কবিরের কাছ থেকে সবচেয়ে বাজে এবং উদ্ভট রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে ৫ অক্টোবর। বোরহান কবিরের জন্ম দেয়া এই রিপোর্টে রিপোর্টে বলা হয়, “নোবেল কমিটির সচিব অধ্যাপক ওলাভ বৃহস্পতিবার লন্ডনে শেখ হাসিনাকে ফোন করেছেন । ফোন করে জানতে চেয়েছেন, ‘শুক্রবার (৬ অক্টোবর) নরওয়ের সময় সকাল ১১ টায় (লন্ডন সময় সকাল ১০ টা) শেখ হাসিনা কোথায় থাকবেন। 

কোন টেলিফোন নাম্বারে তাঁকে পাওয়া যাবে।’ সব তথ্য জেনে তিনি শেখ হাসিনাকে ফোনের কাছে বসে থাকার জন্য অনুরোধ জানান”। লন্ডনে আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, এই নিউজ প্রকাশিত হলে খোদ শেখ হাসিনাই এ নিউজের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেন। নরওয়ে থেকে নোবেল কমিটির কেউ ফোন করেনি তারপরও এই নিউজ কেন প্রকাশ করা হলো কিংবা এর উদ্দেশ্য কি এটা জানতে শেখ হাসিনা সৈয়দ বোরহান কবিরকে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত এগারোটার দিকে ঢাকায় ফোন করেন। 

সূত্রমতে, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর মোবাইলে ফোন দিয়ে শেখ হাসিনা সৈয়দ বোরহান কবিরকে ফোন করেন। এ সময় শেখ রেহানাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ঢাকায় বোরহান কবিরকে যখন শেখ হাসিনা ফোন করেন তখন সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন ৭১ টেলিভিশনের সাংবাদিক ফারজানা রুপা এবং নিউজ টুয়েন্টি ফোরের সামিয়া রহমান এবং সারাবান তহুরা নামে এক মহিলা। 

সারাবান তাহুরাও গণমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত বলে একটি গোয়েন্দা সূত্র এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রটি জানায়, ফোনে বোরহান কবির তার নিউজ সম্পর্কে শেখ হাসিনাকে জানায়, শেখ হাসিনা পুরস্কার না পেলেও নোবেল কমিটির কোনো একজন কর্মকর্তা শুক্রবার সকালে শেখ হাসিনাকে ফোন দেবে, লবিষ্ট গ্রুপের বরাত দিয়ে তাকে এই তথ্য একজন ভারতীয় সাংবাদিক তাকে জানিয়েছে। তবে এই ভারতীয় সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক কিনা, এটি নিশ্চিত হতে পারেনি গোয়েন্দা সূত্র।

গোয়েন্দা সূত্রটি মতে, শেখ হাসিনাকে নেবেলের লোভ দেখিয়ে কয়েক কোটি টাকা সাবাড় করে দেয়ার পর এ ধরণের প্রতারণামূলক রিপোর্ট করা ছাড়া বোরহানের আর কোনো বিকল্প ছিলোনা। অপরদিকে লন্ডনের একটি সূত্র বলেছে, বোরহান কবিরের কথায় আস্থা রেখে ঠিক শুক্রবার লন্ডন সময় সকাল সাড়ে নয়টা থেকেই ফোনের কাছে বসে ছিলেন শেখ হাসিনা। ঠিক একইদিন শুক্রবার সকাল সোয়া দশটায় আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারের সময় নির্দিষ্ট করা ছিল। পরিকল্পনা ছিল, নরওয়ে থেকে কোনো ফোন আসার পর পরই আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী প্রথমে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাবেন।

ঢাকা থেকে সাংবাদিকরা ফোন করলে শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া দেবেন শেখ রেহানা এবং আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী। 

তবে শুক্রবার সকাল সোয়া দশটা পর্যন্ত নরওয়ে থেকে ফোনের অপেক্ষায় থেকে অবশেষে আশা ছেড়ে দেন শেখ হাসিনা। এ সময় কিছুটা ক্ষুদ্ধ শেখ হাসিনা উপস্থিত শেখ রেহানাকে বলেন, এইসব বোরহান-ফোরহানের ফাঁদে জয়ের পা দেয়া ঠিক হয়নি।

এদিকে শেখ হাসিনার কাছে আসার জন্য সকাল থেকেই বয়োবৃদ্ধ আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বসে ছিলেন। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীকে আনার জন্য তার বাসায় অপেক্ষায় ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের তিন নেতা। 

সকাল সোয়া দশটার দিকে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী জানতে পারেন তার সঙ্গে শেখ হাসিনা বৈঠক বাতিল। এদিকে এ ঘটনায় কিছুটা ক্ষুদ্ধ ও বিরক্ত আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী তার বাসায় উপস্থিত কয়েকজনের সমানে মন্তব্য করে বলেন, “নোবেল নিয়ে পুরো বিষয়টি তার কাছে উদ্ভট ও হাস্যকর মনে হয়েছে। তিনি বলেন, নোবেল পুরস্কার দেয়ার লোভ দেখিয়ে নোবেল কমিটি কাউকে ফোন করে ফোনের কাছে বসিয়ে রাখার এমন ঘটনা তিনি অতীতে কখনো শুনেননি। জীবনে এই প্রথম তিনি দেখলেন এবং শুনলেন। 

গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, এটি একটি হাস্যকর ব্যাপার। যারা নোবেল প্রাইজ পাবেন তারা কক্ষণো ফোন কাছে বসে থাকেন কিংবা তাদেরকে ফোন কাছে বসে থাকার জন্য নোবেল কমিটি অনুরোধ করবে যারা এটি বিশেষ করবে তাদের সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন করা অযৌক্তিক নয়। 

এ সময় গাফ্ফার চৌধুরী উপস্থিত যারা ছিলেন তাদেরকে বলেন, বোরহান কবির ছেলেটা কে? তিনি আরো বলেন, নোবেল পুরস্কারকে কেন্দ্র করে ডক্টর ইউনুসকে ছোট করেছেন আর নোবেল নোবেল করে শেখ হাসিনাকে দেশে বিদেশে হাস্যকর চরিত্র বানিয়েছে বোরহান কবির নামের এই ছোকরা।

উল্লেখ্য, দেশের জনগণকে গুম খুন করে নিজ দেশেই “বঙ্গকসাই” হিসেবে পরিচিত শেখ হাসিনা। অপরদিকে মায়ানমারের সেনাদের গণহত্যার হাত থেকে জীবন বাঁচাতে লক্ষ লক্ষ রোহিংগা মুসলিম সংখ্যালঘুরা ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে আসতে চাইলে ৫ সেপ্টেম্বরের আগে পর্যন্ত তাদেরকে আসতে দেয়া হয়নি। 

এমনকি এ সময়ের মধ্যে তাদের অনেককে ধরে জোর করে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে শেখ হাসিনার বাহিনী। ফলে অনেক রোহিঙ্গ্যা মুসলিম নদীতে ডুবে কিংবা মায়ানমার সেনাবাহিনীর গুলিতে মৃত্যুবরণ করেছে। 

তবে এক পর্যায়ে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশ অভিমুখে রওয়ানা হলে সারাবিশ্ব রোহিঙ্গাদের পক্ষে সক্রিয় হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় বাধ্য হয়েই শেখ হাসিনা সীমান্তে শিথিলতা অবলম্বন করতে বাধ্য হন। 

অথচ এর বিপরীতে দেখা যায়, জাতীয় নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়েও ১০ লক্ষ সিরিয়কে আশ্রয় দিয়েছেন জার্মানীর চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মার্কেলে। কোনো লোভে কিংবা চাপে নয়,মার্কেল শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছেন সজ্ঞানে ও সক্রিয়ভাবে। অন্যদিকে বাংলাদেশ শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন বাধ্য হয়ে। জার্মানীর সীমান্ত নিরাপত্তা এতো দৃঢ় যে তারা প্রত্যেক শরণার্থীদের চাইলেই সীমান্তে আটকে দিতে পারতো। 

অথচ বাংলাদেশের এমন কোন সুযোগ ছিল না। কিন্তু এটিকে পুঁজি করে জার্মানিতে নোবেল নোবেল বলে কেউ শোরগোল তুলেনি। অথচ খোদ শেখ হাসিনা, বর্তমান চোরাই সংসদ এবং বোরহান কবির জাতীয় প্রাণীরা নোবেল নোবেল গত এক মাস ধরে যেভাবে চিৎকারে শিৎকারে মেতে উঠেছিলেন তাতে শেখ হাসিনা লজ্জা না পেলেও দেশের জনগণ লজ্জা পেয়েছে।

সুত্রঃ বিডিপলিটিকো
৩ মিলিয়ন ডলার গচ্চা: শেখ হাসিনার নোবেল জুটেনি ফোনও আসেনি ৩ মিলিয়ন ডলার গচ্চা: শেখ হাসিনার নোবেল জুটেনি ফোনও আসেনি Reviewed by news zone on October 07, 2017 Rating: 5
Powered by Blogger.