মদীনার পার্শ্ববর্তী একটি এলাকায় একজন মহিলা মৃত্যুবরণ করলে অপর এক মহিলা তাঁকে গোসল দিতে লাগলেন….



মদীনার পার্শ্ববর্তী একটি এলাকায় একজন মহিলা মৃত্যুবরণ করলে অপর এক মহিলা তাঁকে গোসল দিতে লাগলেন…যে মহিলা গোসল দিচ্ছিলো, তার হাত যখন মৃত মহিলার উরুতে পৌঁছুলো, তখন সে আশেপাশে বসা ২/৪ জন মহিলাকে বলে উঠলো, ওহে আমার বোনেরা, এই যে মহিলা আজ মৃত্যুবরণ করেছে, তাঁর তো অমুক পুরুষের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিলো.

গোসল প্রদানকারী মহিলা যখনি এই কথা বললো অমনি অলৌকিকভাবে তার, হাত মৃত মহিলার উরুর সাথে আটকে গেলো, ছুটানোর জন্য অনেক টানাটানি করলো, কিন্তু ছুটাতে পারলো না.

বেশি জোরাজোরি করলে হাতের সাথে উরুও চলে আসতে লাগলো, এভাবে সময় অতিবাহিত হতে লাগলো, মৃত মহিলার আত্মীয় স্বজনেরা বলতে লাগলো বিবি, দ্রুত গোসল শেষ করুন, সন্ধ্যা হয়ে আসছে, জানাযা শেষে আমাদের দাফনও করতে হবে.

মহিলা বললো : আমিতো তোমাদের মৃত মহিলাকে ছাড়তে চাই, কিন্তু সে আমাকে ছাড়তে চায় না। এভাবে রাত হয়ে গেলো আর হাতও উরুর সাথে আটকে রইলো। ভোর হলো কিন্তু এভাবেই রইলো।

তখন সমস্যার জটিলতা দেখে মহিলার পরিবারের সদস্যগণ উলামায়ে কেরামের কাছে গেলেন এবং একজন আলেমকে বললেন : মৌলভী সাহেব! একজন মহিলা অন্যজনকে গোসল দিচ্ছিলো, তখন তার হাত মৃত মহিলার উরুর সাথে আটকে গেছে। এখন কি করা যায়?

তিনি ফতোয়া দিলেন : ছুরি দিয়ে জ্যান্ত মহিলার হাত কেটে দাও। তখন গোসল প্রদানকারী মহিলার আত্মীয়রা বললো : আমরা আমাদের মহিলাকে ত্রুটিযুক্ত বানাতে চাই না। আমরা তার হাত কাটতে দেবো না।

সবাই অন্য মৌলভীর কাছে গেলেন। তাঁকে সবকিছু বললে তিনি বললেন : ছুরি দিয়ে মৃত মহিলার গোশত আলাদা করে দাও। তখন মৃত মহিলার আত্মীয়রা বললো : আমরা আমাদের মৃতকে খারাপ বানাতে চাই না।

এভাবে তিনদিন তিন-রাত অতিবাহিত হয়ে গেলো। প্রচণ্ড গরম ছিলো। সূর্যের তাপ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছিলো। ফলে দুর্গন্ধ ছড়াতে লাগলো। আশেপাশের অনেক এলাকায় খবর ছড়িয়ে পড়লো।

সবাই ভাবলো; এখানে তো সমাধান হচ্ছে না। চলো মদীনায় যাই। সেখানে তখন ইমাম মালিক (রহঃ) প্রধান ক্বাযীর মর্যাদায় ছিলেন। লোকেরা মালিক (রহঃ) –এর দরবারে পৌঁছে বললো : হযরত!

একজন মহিলা অপর মৃত একজনকে গোসল দিচ্ছিলো, তখন তার হাত মৃত মহিলার উরুর সাথে আটকে গেছে। ছাড়ানোই যাচ্ছে না। তিনদিন হয়ে গেছে। এখন কি ফতোয়া।

ইমাম মালিক (রহঃ) বললেন : আমাকে সেখানে নিয়ে চলো। সেখানে গেলেন এবং চাদর দিয়ে আড়াল দেয়া পর্দার ভেতর দাঁড়িয়ে গোসল প্রদানকারী মহিলাকে বললেন : বিবি!

যখন তোমার হাত আটকে যায় তখন তুমি কিছু বলোনি তো?

মহিলা বললো : আমি তো শুধু এটুকু বলেছি : এই যে মহিলা মৃত্যুবরণ করেছে; তার তো অমুক পুরুষের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিলো।

ইমাম মালিক (রহঃ) বললেন : বিবি! তুমি যে অপবাদ দিয়েছো; এর স্বপক্ষে নিজ চোখে দেখেছে এমন চারজন সাক্ষী তোমার কাছে আছে কি?
মহিলা বললো : না।

তখন ইমাম মালিক বললেন : ঐ মহিলা তোমার সামনে স্বীয় পাপের স্বীকারোক্তি দিয়েছে কি?
মহিলা বললো : না। তখন বললেন : তবে তুমি কিসের ভিত্তিতে অপবাদ দিলে? মহিলা বললো : আমি তো এজন্য বলে

দিয়েছি যে, মৃত মহিলা কলস উঠিয়ে অমুকের দরজার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো।

একথা শুনতেই ইমাম মালিক (রহঃ) সেখানে দাঁড়িয়ে পুরো কুরআন শরীফের

প্রতি দৃষ্টি দিলেন এবং বললেন : কুরআন শরীফের মধ্যে এসেছে> যারা সতী- সাধ্বী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অতঃপর স্বপক্ষে চার জন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে (সুরা নূর : ৪)

যেহেতু তুমি কোনোরূপ প্রমাণ ছাড়া একজন মৃত মহিলার উপর অপবাদ আরোপ করেছো। আমি প্রধান ক্বাযী হিসেবে নির্দেশ দিচ্ছি; জল্লাদ! তাকে বেত্রাঘাত করতে শুরু করো. .

জল্লাদ তাকে প্রহার করতে শুরু করলো। তাকে বেত্রাঘাত করা হচ্ছিলো। সত্তরটি বেত্রাঘাত মারা হলেও হাত পূর্বের মতো আটকে রইলো। পঁচাত্তরটি বেত্রাঘাতের পরও পূর্বের মতো রইলো।

উনআশি বেত্রাঘাতের পরও হাত উরুর সাথে আটকে রইলো। অতঃপর যখন আশিটি বেত্রাঘাত সম্পন্ন হলো, অমনি হাত উরু থেকে এমনিতেই পৃথক হয়ে গেলো।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত থেকে মুক্ত তো রাখুক এবং অন্যের গীবত গাওয়া থেকে।আমীন

আল্লাহু আকবার, আল্লাহ্ পাক আমাদের সবাইকে , হেদায়াত দান করুন আমীন.

সংগৃহিত
মদীনার পার্শ্ববর্তী একটি এলাকায় একজন মহিলা মৃত্যুবরণ করলে অপর এক মহিলা তাঁকে গোসল দিতে লাগলেন…. মদীনার পার্শ্ববর্তী একটি এলাকায় একজন মহিলা মৃত্যুবরণ করলে অপর এক মহিলা তাঁকে গোসল দিতে লাগলেন…. Reviewed by বার্তা কক্ষ on June 14, 2018 Rating: 5

Post Comments

Powered by Blogger.