গতকাল রোববার সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তাতে শোনা যাচ্ছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলছেন, “যতাই বলেন আন্দোলন, আন্দোলন ঢাকায় সেভাবে করা সম্ভব হয়নি। এখানে আবার পরিবারের মধ্যে গণ্ডগোল আছে। তারেক রহমানকে তো আপনারা ভালো করে চেনেন। বউয়ের সঙ্গেও গণ্ডগোল। বউও চায় ক্ষমতা, সেও চায় ক্ষমতা।”
প্রধানমন্ত্রী সহকারী প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন ভিডিওটি পোস্ট করলে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। রোববার রাত পর্যন্ত তাঁর ওয়াল থেকে ভিডিওটি ৩ হাজার বারের বেশি শেয়ার হয়েছে। ভিউ হয়েছে ২ লাখের মতো। খোকন ভিডিওটির সাথে ক্যাপশন হিসেবে যোগ করেন, “ম্যাডাম জিয়ার মুখেই শুনুন …….”।
কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভিডিওটি এডিট করে তৈরি করা। তাতে খালেদা জিয়ার বিভিন্ন প্রসঙ্গের বক্তব্য কেটে জোড়াতালি দিয়ে পাশাপাশি বসানো হয়েছে।
Tarique Rahman নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ৩ নভেম্বর আপলোড করা একটি ভিডিওর শিরোনাম “Begum Khaleda Zia’s Speech | Park Plaza, London | 1 November 2015”। এই ভিডিওটি লন্ডনে তখন সফরকালে এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার দেয়া বক্তব্যের পূর্ণাঙ্গ রেকর্ড।
এই ভিডিওর ২৫ মিনিট ২৯ সেকেন্ড থেকে ৪৪ সেকেন্ড পর্যন্ত খালেদা জিয়ার বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো–
“…এই এরশাদ প্রথমে অংশগ্রহণ করে নাই। এরশাদ কিন্তু রংপুর থেকে উইথড্র করেছে তার সিট। ঢাকা থেকে উইথড্র করতে চেয়েছে, জোর করে তাকে করতে দেয়া হয়নি।
তাকে সিএমএইচে… এরশাদ কিন্তু অংশগ্রহণ করতে চায়নি। এখানে আবার পরিবারের মধ্যে গণ্ডগোল আছে। তাকে তো আপনারা ভালো করে চেনেন। বউয়ের সঙ্গেও গণ্ডগোল। বউও চায় ক্ষমতা, সেও চায় ক্ষমতা।….”
অর্থাৎ ‘এরশাদ সম্পর্কে বলা’ খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে ‘তারেক রহমান সম্পর্কে বলা’ হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে “এখানে আবার পরিবারের মধ্যে গণ্ডগোল আছে।
তারেক রহমানকে তো আপনারা ভালো করে চেনেন। বউয়ের সঙ্গেও গণ্ডগোল। বউও চায় ক্ষমতা, সেও চায় ক্ষমতা।”- এই বক্তব্যটুকুর মধ্যে এরশাদকে উদ্দেশ্য করে বলা ‘তাকে’ শব্দের পরিবর্তে অন্য কোনো জায়গা থেকে কেটে ‘তারেক রহমানকে’ শব্দটি লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।
আবার “যতাই বলেন আন্দোলন, আন্দোলন ঢাকায় সেভাবে করা সম্ভব হয়নি।” বক্তব্যটুকু অন্য জায়গা থেকে এনে যুক্ত করা হয়েছে।
রোববার দিনে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অন্য আরেকটি ভিডিও তার ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন।
এই ভিডিওটিও খালেদা জিয়ার আলোচ্য অনুষ্ঠানের (২০১৫ সালের) ভিডিওর দুই জায়গায় ভিন্ন দুটি বক্তব্যকে কেটে জোড়া লাগিয়ে বানানো। এটির একটি বক্তব্য দেখা যাচ্ছে এমন–
“আমাদের রিজভী আহমেদ আপনারা জানেন। মেরুদণ্ডহীন অপদার্থ একটা লোক। অপদার্থ একটা লোক। আমি সব সময় বলেছি। মানে বিএনপিকে শেষ করে দেয়ার প্ল্যান।”
এবার মূল ভিডিওর ২৯ মিনিট ৩০ সেকেন্ড থেকে ৩০ মিনিট ৩২ সেকেন্ড পর্যন্ত খালেদা জিয়ার কয়েকটি কথা হুবহু তুলে ধরছি–
“…আজকে দলীয়করণ করেছে, আমি আগে বলেছি প্রশাসন হয়েছে, পুলিশ হয়েছে, তারপরে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন কমিশন পুরা দলীয়করণ করেছে। সব দলীয় লোকজনকে বসাইছে।
নির্বাচন কমিশনার- এই ভদ্রলোক একসময় আমারও সেক্রেটারি ছিলো। এখন যে রকিব উদ্দীন, আমারও সেক্রেটারি ছিলো, প্রাইমারি এডুকেশন সেক্রেটারি। আমার সঙ্গেও কাজ করেছে।
কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগ আমি জানতাম। তারপরেও আমরা এগুলো করিনি। আমরা বলেছি- না, এটা ঠিক না। অফিসার হিসেবে মোটামুটি ভালো ছিলো।
তারপরে আমরা সেখান থেকে আবার পার্লামেন্টে সেক্রেটারি করেছিলাম। সেখানেও কাজ করেছে। এই রকিবউদ্দীনকে বের করে আনলো, তিনি আওয়ামী লীগার। এবং তিনি নরম প্রকৃতির, একদম আজ্ঞাবহ, মেরুদণ্ডহীন, অপদার্থ একটা লোক। অপদার্থ একটা লোক। আমি সব সময় বলেছি।….”
অর্থাৎ খালেদা জিয়া “মেরুদণ্ডহীন, অপদার্থ একটা লোক।” কথাগুলো রিজভী আহমেদকে উদ্দেশ্য করে বলেননি। রিজভীর নামটি মূল ভিডিওর ৩৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের পর থেকে কেটে এনে রকীবউদ্দীনের সম্পর্কে বলা বক্তব্যের আগে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। সেখানে খালেদা জিয়া রিজভীকে বাস্তবে যা বলেছেন তা হলো–
“…আমাদের রিজভী আহমেদ। আপনারা জানেন যে, অত্যন্ত সিনসিয়ার একটা ভালো ছেলে, ভদ্র ছেলে, সৎ ছেলে। রিজভী আহমেদ- বেচারা চলতে পারে না। এরশাদ বিরোধী আন্দোলন করতে যেয়ে সে পঙ্গু হয়েছে।….”
লক্ষ্য করার বিষয় হলো, উল্লিখিত এডিট করে প্রচার করা প্রথম ভিডিওটিতে খালেদা জিয়ার চেহারাকে জুম-ইন করে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে (প্রতিবেদনের প্রথম ছবি দ্রষ্টব্য); যাতে তাৎক্ষণিকভাবে দেখলে মূল ভিডিওর সাথে এটির মিল বুঝা সহজ হবে না।
তবে উভয় ভিডিওতেই খালেদা জিয়ার শাড়ির রং একই। আবার মূল ভিডিওতে ক্যামেরা নড়ে উঠে মঞ্চ থেকে সেটির ফোকাস ভিন্ন দিকে চলে যাওয়ার একটি দৃশ্য এডিট করা ভিডিওতেও রয়েছে।
তবে সিদ্দিকী নাজমুল আলমের ওয়ালে পোস্ট করা ভিডিওতে খালেদা জিয়ার চেহারা বা ভিডিওতে অতিরিক্ত কোনো এডিট করা হয়নি। শুধু দুই ভিন্ন প্রসঙ্গের বক্তব্য কেটে এক জায়গায় করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী সহকারী প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন ভিডিওটি পোস্ট করলে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। রোববার রাত পর্যন্ত তাঁর ওয়াল থেকে ভিডিওটি ৩ হাজার বারের বেশি শেয়ার হয়েছে। ভিউ হয়েছে ২ লাখের মতো। খোকন ভিডিওটির সাথে ক্যাপশন হিসেবে যোগ করেন, “ম্যাডাম জিয়ার মুখেই শুনুন …….”।

Tarique Rahman নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ৩ নভেম্বর আপলোড করা একটি ভিডিওর শিরোনাম “Begum Khaleda Zia’s Speech | Park Plaza, London | 1 November 2015”। এই ভিডিওটি লন্ডনে তখন সফরকালে এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার দেয়া বক্তব্যের পূর্ণাঙ্গ রেকর্ড।
এই ভিডিওর ২৫ মিনিট ২৯ সেকেন্ড থেকে ৪৪ সেকেন্ড পর্যন্ত খালেদা জিয়ার বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো–
“…এই এরশাদ প্রথমে অংশগ্রহণ করে নাই। এরশাদ কিন্তু রংপুর থেকে উইথড্র করেছে তার সিট। ঢাকা থেকে উইথড্র করতে চেয়েছে, জোর করে তাকে করতে দেয়া হয়নি।
তাকে সিএমএইচে… এরশাদ কিন্তু অংশগ্রহণ করতে চায়নি। এখানে আবার পরিবারের মধ্যে গণ্ডগোল আছে। তাকে তো আপনারা ভালো করে চেনেন। বউয়ের সঙ্গেও গণ্ডগোল। বউও চায় ক্ষমতা, সেও চায় ক্ষমতা।….”
অর্থাৎ ‘এরশাদ সম্পর্কে বলা’ খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে ‘তারেক রহমান সম্পর্কে বলা’ হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে “এখানে আবার পরিবারের মধ্যে গণ্ডগোল আছে।
তারেক রহমানকে তো আপনারা ভালো করে চেনেন। বউয়ের সঙ্গেও গণ্ডগোল। বউও চায় ক্ষমতা, সেও চায় ক্ষমতা।”- এই বক্তব্যটুকুর মধ্যে এরশাদকে উদ্দেশ্য করে বলা ‘তাকে’ শব্দের পরিবর্তে অন্য কোনো জায়গা থেকে কেটে ‘তারেক রহমানকে’ শব্দটি লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।
আবার “যতাই বলেন আন্দোলন, আন্দোলন ঢাকায় সেভাবে করা সম্ভব হয়নি।” বক্তব্যটুকু অন্য জায়গা থেকে এনে যুক্ত করা হয়েছে।
রোববার দিনে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অন্য আরেকটি ভিডিও তার ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন।

“আমাদের রিজভী আহমেদ আপনারা জানেন। মেরুদণ্ডহীন অপদার্থ একটা লোক। অপদার্থ একটা লোক। আমি সব সময় বলেছি। মানে বিএনপিকে শেষ করে দেয়ার প্ল্যান।”
এবার মূল ভিডিওর ২৯ মিনিট ৩০ সেকেন্ড থেকে ৩০ মিনিট ৩২ সেকেন্ড পর্যন্ত খালেদা জিয়ার কয়েকটি কথা হুবহু তুলে ধরছি–
“…আজকে দলীয়করণ করেছে, আমি আগে বলেছি প্রশাসন হয়েছে, পুলিশ হয়েছে, তারপরে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন কমিশন পুরা দলীয়করণ করেছে। সব দলীয় লোকজনকে বসাইছে।
নির্বাচন কমিশনার- এই ভদ্রলোক একসময় আমারও সেক্রেটারি ছিলো। এখন যে রকিব উদ্দীন, আমারও সেক্রেটারি ছিলো, প্রাইমারি এডুকেশন সেক্রেটারি। আমার সঙ্গেও কাজ করেছে।
কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগ আমি জানতাম। তারপরেও আমরা এগুলো করিনি। আমরা বলেছি- না, এটা ঠিক না। অফিসার হিসেবে মোটামুটি ভালো ছিলো।
তারপরে আমরা সেখান থেকে আবার পার্লামেন্টে সেক্রেটারি করেছিলাম। সেখানেও কাজ করেছে। এই রকিবউদ্দীনকে বের করে আনলো, তিনি আওয়ামী লীগার। এবং তিনি নরম প্রকৃতির, একদম আজ্ঞাবহ, মেরুদণ্ডহীন, অপদার্থ একটা লোক। অপদার্থ একটা লোক। আমি সব সময় বলেছি।….”
অর্থাৎ খালেদা জিয়া “মেরুদণ্ডহীন, অপদার্থ একটা লোক।” কথাগুলো রিজভী আহমেদকে উদ্দেশ্য করে বলেননি। রিজভীর নামটি মূল ভিডিওর ৩৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের পর থেকে কেটে এনে রকীবউদ্দীনের সম্পর্কে বলা বক্তব্যের আগে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। সেখানে খালেদা জিয়া রিজভীকে বাস্তবে যা বলেছেন তা হলো–
“…আমাদের রিজভী আহমেদ। আপনারা জানেন যে, অত্যন্ত সিনসিয়ার একটা ভালো ছেলে, ভদ্র ছেলে, সৎ ছেলে। রিজভী আহমেদ- বেচারা চলতে পারে না। এরশাদ বিরোধী আন্দোলন করতে যেয়ে সে পঙ্গু হয়েছে।….”
লক্ষ্য করার বিষয় হলো, উল্লিখিত এডিট করে প্রচার করা প্রথম ভিডিওটিতে খালেদা জিয়ার চেহারাকে জুম-ইন করে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে (প্রতিবেদনের প্রথম ছবি দ্রষ্টব্য); যাতে তাৎক্ষণিকভাবে দেখলে মূল ভিডিওর সাথে এটির মিল বুঝা সহজ হবে না।
তবে উভয় ভিডিওতেই খালেদা জিয়ার শাড়ির রং একই। আবার মূল ভিডিওতে ক্যামেরা নড়ে উঠে মঞ্চ থেকে সেটির ফোকাস ভিন্ন দিকে চলে যাওয়ার একটি দৃশ্য এডিট করা ভিডিওতেও রয়েছে।
তবে সিদ্দিকী নাজমুল আলমের ওয়ালে পোস্ট করা ভিডিওতে খালেদা জিয়ার চেহারা বা ভিডিওতে অতিরিক্ত কোনো এডিট করা হয়নি। শুধু দুই ভিন্ন প্রসঙ্গের বক্তব্য কেটে এক জায়গায় করা হয়েছে।
“বউও চায় ক্ষমতা, সেও চায় ক্ষমতা ” ভিডিওটি এডিট করে তৈরি করা
Reviewed by বার্তা কক্ষ
on
June 14, 2018
Rating:

No comments: