বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারের স্বপ্ন এবার দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। রোববার সকালে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
রিজভী হুঁশিয়ারি দেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ছাড়া জনগণ একাদশ জাতীয় নির্বাচন হতে দেবে না। দলটির পাতানো ফাঁদেও পা দেবে না তারা।’
এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন দাবি করেন। বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশের জনগণ সরকারের অন্যায়-অবিচার এবং দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।
কারণ, বাংলাদেশ হলো গণতান্ত্রিক দাবি আদায় এবং আন্দোলনের সূতিকাগার। জনগণ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিও আদায় করবে।’
আগামীকাল সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখনো অনুমতি পাইনি। সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। আশা করছি, সরকার অনুমতি দেবে।’
রিজভী নির্বাচন নিয়ে সরকারি দলের মন্ত্রী ও নেতাদের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন। বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণকে ধোকা দেয়ার বিদ্যা ভালো করেই জানে।
দলটি আত্মসম্মানহীন প্রতারক, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করাই তাদের রাজনৈতিক ইশতেহার। আওয়ামী লীগ নেতাদের কথায় মনে হচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে তাদের মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্ত হয়ে আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিভাবে আরেকটি ভোটারবিহীন নির্বাচন মঞ্চস্থ করা যায়, সে আয়োজনে ব্যস্ত ক্ষমতাসীনরা।
নীলনকশার মাস্টারপ্লানের অংশ হিসেবে তারা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাবন্দি করেছে। আর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে সাজা দিয়েছে।’ উৎস- পরিবর্তন
অন্য দিকের খবর- ‘আল্লাহর কি বিধান, তারাই পেল ৩০ সিট’
বিএনপি নেতাদের শোভনভাবে বক্তব্য দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ। সোমবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা তো ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে বলেছিলেন- আওয়ামী লীগ ৩০টি সিটও পাবে না।
আল্লাহর কি বিধান নির্বাচনের পর বিএনপিই ২৮ সিট পেল। পরে উপ-নির্বাচনে আরও দুটি আসন বাড়ায় ৩০টি পূর্ণ করতে পেরেছিল তারা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না, আগামী নির্বাচন ঘিরে এখন বিএনপি নেতাদের মুখে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে যেসব বক্তব্য আসছে, তা তাদের গলায় ফুটুক। আমরা চাই- অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আপনারা আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন।’
‘বাংলাদেশ অন্ধকার টানেলের মধ্যে আছে- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন,
‘যদি তাই হতো, তাহলে কিভাবে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার চিঠি হস্তান্তর করল? বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে এই স্বীকৃতি আমরা স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যেই পেতাম।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘জাতি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার পর বিএনপি অভিনন্দন জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।
দলটির নেতাদের বক্তব্যে প্রমাণিত হয়, তারা বাস্তবতার নিরীখে বক্তব্য রাখছেন না, রাজনৈতিক বিদ্বেষপ্রসূত হয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন, যা বিএনপির জন্য ব্যর্থতা ও রাজনৈতিক হীনতা।’
হাছান মাহমুদ বিএনপি নেতাদের শোভনভাবে রাজনৈতিক সমালোচনা করার অনুরোধ জানান। বলেন,
‘আপনারা রাজনৈতিক ভাষায় কথা বলুন এবং অশোভন বক্তব্য না রেখে অব্শ্যই শোভনভাবে সমালোচনা করবেন। দয়া করে আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অশোভন সমালোচনা করবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দলীয় সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগের মুখপাত্র হিসেবেই বক্তব্য উপস্থাপন করেন। সম্প্রতি তিনি (ওবায়দুল কাদের) দেশের বিগত নয় বছরের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন, এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু, বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ ও খন্দকার মোশাররফ হোসেন তার বক্তব্যকে বিকৃত করে নানা ধরনের কথা ছড়াচ্ছেন।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কয়েকদিন আগে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি,
লন্ডনে বিএনপির এক সমাবেশে দলটির নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন- ‘রিজভী আহমেদ একজন মেরুদণ্ডহীন মানুষ’।
ওনার মেরুদণ্ড আছে কি নাই, সেটা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। কিন্তু, সাম্প্রতিককালে তার বক্তব্যে মনে হচ্ছে, দলীয় অফিসে দীর্ঘদিন পরিবার-পরিজনহীন থাকার কারণে তিনি কিছুটা মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখা দরকার।’
আওয়ামী লীগের ইচ্ছায় রাজধানীতে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না- বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিএনপি তো চট্টগ্রাম, খুলনাসহ বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ করেছে। এমনকি তারা তাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনেও সমাবেশ করেছে।
সেখানে তারা বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টাও করেছে। সমাবেশের অনুমতি দেয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। নিশ্চয় কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
আ’লীগ মুজিবের আমল থেকেই ধোকার বিদ্যা ভালোই জানে
Reviewed by বার্তা কক্ষ
on
June 17, 2018
Rating:

No comments: