বিএনপিকে জাফরুল্লাহর কিছু পরামর্শ


কান্নাকাটি না করে বিএনপিকে মাঠে নামার পরামর্শ দিয়ে গণস্বাস্থ্য বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, দেশবাসী ক্ষিপ্ত। আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে। চলেন না, চেষ্টা করে দেখি। 

এখানে কান্নাকাটি করে লাভ নাই, সামনে আসতে হবে। মানুষের মধ্য ক্ষোভ জমা হয়ে আছে। ক্ষোভ কি তোফায়েল সাহেব, আমু সাহেব, নাসিম সাহেব ও মেনন সাহেবের নাই? সুতরাং ইতিহাস যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? তবে আমাদেরকে মাঠে নামতে হবে।

মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘মওলানা ভাসানীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে’ এ সভায় অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আগামী ৩০ তারিখে যে সংসদ বসবে, সেই সংসদের কোন নৈতিক অধিকার। 

এর প্রতিবাদে গণতন্ত্রের কফিন নিয়ে আমরা একটি মিছিল করি, চলেন। কারণ গণতন্ত্রের কবর হয়ে গেছে। বাংলাদেশে আগে রাজনৈতিক কর্মী গুম হতো। এখন গুম হয়েছে দেশের গণতন্ত্র। দেশটিই গুম হয়ে গেছে। আর কোনো কিছু বাকি থাকলো না।

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, পালিয়ে বেড়াতে থাকলে কোনো লাভ হবে না। আসুন, গ্রেপ্তার করুক না আরো ৫০ হাজার। 

আর আমি প্রত্যাশা করি, গণতন্ত্র হত্যা করার প্রতিবাদে আপনারা প্রতিদিন আড়াই ঘন্টা শহীদ মিনারে অনশন করবেন। এটা করতে সহজ হবে না মারও খেতে পারেন। তবে আমরা আপনাদের সাথে থাকবো, মারও খাবো। এছাড়া কোনো না কোনো কর্মসূচি দিতেই হবে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের বিষয়ে তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরাও আন্দোলন করি। জিরো টলারেন্সের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি ৩০ ডিসেম্বরের ভোট। আমি বলি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার সঙ্গে আমরাও আছি, আগে নিজের ঘর ঠিক করুন।

এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্য জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, চীনের সাথে আমাদের সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো ছিল। কিন্তু এখন নাই। আর রাজপথে থেকে শুধু এই সরকারকে হঠানো যাবে না। সুতরাং ভারত ও চীনের সাথে সম্পর্ক ভালো করতে হবে।

মোস্তফা জামাল হায়দারের এই বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষন করে জাফরুল্লাহ বলেন, আমাদেরকে রাজপথেই থাকতে হবে। বিদেশীরা আমাদেরকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসাবে না। তাই চীন ও ভারতের প্রত্যাশা না করে আমাদের যে শক্তি আছে, সেটা আমরা ব্যবহার করি।

ইসির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মামলা বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা জানি কিছু হবে না। কারণ বিচারবিভাগ কৃতদাস হয়ে গেছে। আমার বিরুদ্ধে হয়তো আরেকটা মামলা হয়ে যাবে! পুলিশের দুই আইজিপি ও ব্যারিস্টার নাজমু্ল হুদার দুর্নীতি মামলায় জামিন হয়েছে। অথচ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হচ্ছে না।

তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে তিনি বলেন, আরো ৫ বছর সময় (শেখ হাসিনা) পেয়েছেন। উনি দখল করে নিয়েছেন। সুতরাং তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে তাদের এখন আর কি অজুহাত থাকবে।

আজ শাহবাগে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের ৩০ শতাংশ কোটা দাবির আন্দোলনের বিষয়ে ড. জাফরুল্লাহ বলেন, ৩০ শতাংশ কেনো, ১০০ শতাংশ কোটা নয় কেনো? কারণ এদেশ তো স্বাধীন করেছেন মুক্তিযুদ্ধারা। সুতরাং ৭ কোটি মুক্তিযুদ্ধের পরিবারদের জন্য তো এই ১০০ শতাংশ হওয়া উচিত। কিন্তু আজকে সব কিছু ভাগবাটোয়ারার দিন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির ভাইন চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. জসীম উদ্দিন আহমদ, ড. দিলারা চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিএনপিকে জাফরুল্লাহর কিছু পরামর্শ বিএনপিকে জাফরুল্লাহর কিছু পরামর্শ Reviewed by বার্তা কক্ষ on January 22, 2019 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.