আওয়ামী লীগ সরকার টানা তৃতীয়বার যেন তেনভাবে ক্ষমতায় এসে নানা ধরনের কথার ফুলঝুড়ি দিয়ে জনগণকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছে। নির্বাচনের জালিয়াতিকে আড়াল করার জন্য কুটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়ে বিভিন্ন দেশের অভিনন্দন আদায়েরও চেষ্টা করছে।
কিন্তু তারপরও ছিদ্রপথ দিয়ে যেন অনেক কিছু বেরিয়ে যাচ্ছে। ফলে হাতে থাকা জিনিষগুলোও যেন আর আওয়ামী লীগের হাতে থাকছে না। এজন্যই প্রবাদে বলে চোরের ১০ দিন আর গেরস্থের একদিন।
আজ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও পত্রিকায় একটি খবর প্রকাশিত হওয়ার পর আওয়ামী নীতি নির্ধারক মহলে চিন্তার ভাঁজ পড়ে গেছে বলে জানা গেছে। এবারের নির্বাচনের আগে থেকেই দেশী বিদেশী পর্যবেক্ষকদেরকে নিয়োগ করার ব্যপারে নির্বাচন কমিশন নানা ধরনের অযাচিত বিধি নিষেধ আরোপ
করে। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিদ্ধ নির্বাচনী পর্যবেক্ষকসহ আমাদের দেশের অনেক পরিচিত মুখও নির্বাচন কভার করার সুযোগ পায়নি। অন্যদিকে পর্যবেক্ষকদেরকে মুর্তির মত দাঁড়িয়ে থাকার নির্দেশ দেয়ার পর থেকে অনেকের মনেই তখন নির্বাচন কতটুকু সুষ্ঠু হবে তা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়।
তাই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভয়াবহ জালিয়াতিকে লুকোনোর জন্য নির্বাচনের পরদিনই গণভবনে আওয়ামী লীগের দেশীয় ও বিদেশ থেকে ভাড়া করে আনা পর্যবেক্ষকদেরকে নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেই সম্মেলনে দালাল পর্যবেক্ষকদের কাছ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু
হয়েছে বলে স্বীকৃতিও আদায় করা হয়। সেগুলো সরকারের দালাল মিডিয়াগুলো আবার বেশ ফলাও করে প্রচারও করে। কিন্তু সব গোমর ফাঁস হয়ে গেছে এবার। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্স সেই পর্যবেক্ষকদেরকে নিয়ে একটি সংবাদ প্রচার করে যাতে পর্যবেক্ষকরা আগের অবস্থান থেকে পল্টি মারেন। তারা অবলীলায় স্বীকারও করলেন যে, আমাদেরকে ভুল বোঝানো হয়েছে, আসলে নির্বাচন সুষ্ঠূ হয়নি।
পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসা পর্যবেক্ষকেরা নির্বাচন নিয়ে এখন ভিন্ন কথা বলছেন। নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের নিয়ে করা এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, যতটা অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে বলে তারা সেসময়ে মন্তব্য করছিলেন তাঁরা, এখন বলছেন নির্বাচন ততটা সুষ্ঠু হয়নি।
কানাডার তানিয়া ফস্টার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে বাংলাদেশে এসেছিলেন। ভোটের পরদিন গণভবনে সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই অনুষ্ঠানে তানিয়া বলেছিলেন, ‘নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক হয়েছে। তবে তিনি এখন বলছেন ভিন্ন কথা। তার মতে, তখন তিনি সবকিছু একটু বেশি সরলভাবে নিয়েছিলেন।
একই রকম মনোভাব নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংগঠন সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুস সালামেরও (৭৫)।
তিনি বলেছেন, ভোটার ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তিনি শুনেছেন, ‘আওয়ামী লীগের কর্মীরা ভোটের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভরেছেন, ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। আমার মনে হচ্ছে নতুন ভোট হওয়া উচিত।’ আবদুস সালাম বলেন, ‘এখন আমি সবকিছু জানতে পেরেছি এবং বলতে পারি, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি।’
সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যোগাযোগ আছে বলে অভিযোগ আছে। সংগঠনটির উপদেষ্টা কমিটিতে আছেন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দুই সাংসদ। এ ছাড়া নাম ও লোগোতে মিল থাকলেও দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক)
সঙ্গে সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের কোনো সম্পর্কই নেই। সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন কানাডা, ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা থেকে কয়েকজন পর্যবেক্ষক নিয়ে আসে। ওই দলেই ছিলেন তানিয়া ফস্টার। ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের দিন এবং তার পরদিন ওই পর্যবেক্ষকেরা সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে।
তানিয়া ফস্টার বলেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে যে সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের যোগসূত্র রয়েছে বা সংগঠনটি যে সার্কের কেউ নয়, তা তিনি জানতেন না। তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার ভালো লাগেনি। আমার মনে হচ্ছে সবকিছু আমি একটু বেশি সরলভাবে নিয়েছিলাম।’
তানিয়া আরও বলেন, ‘আমরা কেবল ঢাকার নয়টি ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিলাম, তারপরও আমাদের প্রতিবেদন যে এভাবে ওরা কাজে লাগােেব, তা বুঝতে পারিনি। আমরা অপেক্ষাকৃত প্রতিকূল এলাকাগুলোয় যাইনি।’
এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও ত্রুটিপূর্ণ বলে মন্তব্য করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্য থেকে দ্বৈবচয়নের (লটারি) ভিত্তিতে ৫০টি বেছে নেয় টিআইবি। নির্বাচনের দিন ৪৭ আসনে কোনো না কোনো নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছে সংস্থাটি। অনিয়মের ধরনের মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হলো গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ৫০টির মধ্যে ৪১টি আসনে জাল ভোট; ৪২টি আসনে প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর নীরব ভূমিকা; ৩৩টি আসনে নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালটে সিল; ২১টি আসনে আগ্রহী ভোটারদের হুমকি দিয়ে তাড়ানো বা কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা; ৩০টি আসনে বুথ
দখল করে প্রকাশ্যে সিল মেরে জাল ভোট; ২৬টি আসনে ভোটারদের জোর করে নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করা; ২০টিতে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার আগেই ব্যালট বাক্স ভরে রাখা; ২২টিতে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়া; ২৯টিতে প্রতিপক্ষের পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না দেওয়া ইত্যাদি।
উৎসঃ অ্যানালাইসিস বিডি
আরও পড়ুনঃ নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী আলোচিত দুটি সংস্থা ‘সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন’ এবং ‘ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম’।
সদ্য অনুষ্ঠিত সরকার নিয়ন্ত্রিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। অনেক বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসতে পারেননি। ভিসা জটিলতা না সরকারের সহায়তা না করা, বিতর্ক হয়েছে বিস্তর।
• একটির মহাসচিব, আরেকটির নির্বাহী পরিচালক একই ব্যক্তি
• একটির অফিস ও ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি
• আরেকটির চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টা আ. লীগ এমপি
• নীতিমালা অনুযায়ী যা থাকা যায় না
• টাকা আসে নগদে ও বিকাশে
• নামের আগে ‘সার্ক’ থাকলেও, ‘সার্ক’-এর সঙ্গে সম্পর্ক নেই
এবারের নির্বাচনে দেশি ৮১টি পর্যবেক্ষক সংস্থার ২৫ হাজার ৯০০ জন এবং ওআইসি ও কমনওয়েলথ থেকে আমন্ত্রিত ও অন্যান্য বিদেশি পর্যবেক্ষক ৩৮ জন, কূটনৈতিক বা বিদেশি মিশনের কর্মকর্তা ৬৪ জন এবং বাংলাদেশে দূতাবাস বা হাইকমিশন বা বিদেশি সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশি ৬১ জন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছেন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী আলোচিত দুটি সংস্থা ‘সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন’ এবং ‘ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম’।
এই দুটি সংস্থা গত ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, “একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অতীতের চেয়ে অনেকাংশে ভালো, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, “সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের ৫ হাজার ৭৬৫ জন সদস্য নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন।”
বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা তিনটি দলে ভাগ হয়ে রাজধানীর ২৪টি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। এছাড়াও, ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম দেশের ২১৪টি আসনের ১৭ হাজার ১৬৫টি কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কানাডার লেবার মার্কেট প্ল্যানিংয়ের সিনিয়র অ্যানালাইসিস তানিয়া ডন ফস্টার, মানবাধিকার কর্মী চ্যালি ডন ফস্টার, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী হাকিমুল্লাহ মুসলিম, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও
সাবেক সংসদ সদস্য নাজির মিয়া, নেপালের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মাদীন আলী, কলকাতা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক কমল ভট্টাচার্য, কলকাতা জজকোর্টের আইনজীবী ড. গৌতম ঘোষ এবং শ্রীলঙ্কার সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের বিশেষ প্রতিনিধি এহসান ইকবাল।
কানাডা থেকে আসা পর্যবেক্ষক তানিয়া ডন ফস্টার নির্বাচনের দিন বলেছিলেন, “…এখানকার নির্বাচনের পরিবেশ কানাডার মতই।” (প্রথম আলো, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮)
‘সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন’ এবং ‘ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম’-এর কার্যক্রম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা হয়েছে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের পক্ষ থেকে।
সংস্থা দুটির নাম আগে শোনা যায়নি। দেশের অন্য কোনো পর্যবেক্ষকরাও তাদের বিষয়ে জানেন না। এই সংস্থা দুটি এর আগে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার পর্যায়ের কোনো নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যায়নি।
গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে নৌকার প্রতিকৃতি তুলে দিচ্ছেন আবেদ আলী (ডান থেকে দ্বিতীয়)। সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের ফেসবুক পেজে ছবিটি গত ২২ নভেম্বর প্রকাশ করা হয়।
খোঁজ করতে গিয়ে ‘ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম’-এর কার্যালয় ও ওয়েবসাইট পাওয়া যায়নি। তাদের কার্যক্রম সম্পর্কেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
‘সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন’-এর নাম অনুযায়ী ধারণা করা যায় আন্তর্জাতিক বা আঞ্চলিক সংস্থা। মাওলানা মোহাম্মদ আবেদ আলী নামক একজন ব্যক্তিই দুটি সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি একটির মহাসচিব এবং অন্যটির নির্বাহী পরিচালক।
অনুসন্ধান করতে গিয়ে ‘সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন’-এর ওয়েবসাইটের (https://sarchumanrights.org/) সন্ধান পাওয়া গেল। ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, সংস্থাটি সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ-ভিত্তিক। ‘সার্ক’-এর সঙ্গে সংস্থাটির কোনো সম্পর্ক ওয়েবসাইটের তথ্যে নেই।
ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কায় তাদের একজন করে প্রতিনিধির নাম ও ছবি ওয়েবসাইটে দেওয়া রয়েছে। অফিসের ঠিকানা বা প্রতিনিধিদের ফোন নম্বরও ডেইলি স্টার অনলাইনকে দিতে পারেননি সংস্থার মহাসচিব আবেদ আলী।
সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টা হিসেব রয়েছেন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির একাধিক এমপি। ‘তারা প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ সহায়তাও দিয়ে থাকেন’ দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের প্রশ্নের উত্তরে এ তথ্য জানিয়েছেন মহাসচিব আবিদ আলী।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালার ৪.৩ ধারায় লেখা রয়েছে, “’নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সহিত সরাসরি জড়িত ছিলেন বা আছেন কিংবা নিবন্ধন লাভের জন্য আবেদনকৃত সময়ের মধ্যে কোন নির্বাচনের প্রার্থী হইতে আগ্রহী এইরূপ কোন ব্যক্তি যদি পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদনকারী কোন সংস্থার প্রধান
নির্বাহী কিংবা পরিচালনা পর্ষদের বা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হইয়া থাকেন, তাহা হইলে উহা যে নামেই অভিহিত হউক না কেন উক্ত সংস্থাকে পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন করা হইবে না।”
কিন্তু, তারা নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক হিসেবে নিবন্ধন পেয়েছেন নির্বাচন কমিশন থেকে। রাজনীতিবিদদের চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টা রেখে কী করে নিবন্ধন পেলো ‘সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন?’- দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের এই প্রশ্নের উত্তরে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব বলেন, “এদের ব্যাপারে এতো বিস্তারিত আমার জানা নেই।”
ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যানুসারে, সংস্থাটির চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর উপজেলা) আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য মো. রুহুল আমিন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শিকদার মকবুল হক, সাবেক মন্ত্রী নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম, পার্বত্য খাগড়াছড়ি আসনে জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. সোলায়মান আলম শেঠ।
সংস্থাটির সভাপতি হিসেবে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি ও মানিকগঞ্জ দরবার শরীফের খলিফা মো. আব্দুস সালাম এবং মহাসচিব হিসেবে রয়েছেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী।
‘সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন’-এর ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ ঘেঁটে শুধু মহাসচিব মোহাম্মদ আবেদ আলীর কর্মকাণ্ডই নজরে এসেছে বেশি। কখনও তিনি বিভিন্ন মানবাধিকারবিষয়ক সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন, কখনও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আঞ্চলিক কমিটির সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন।
সর্বশেষ গত ২২ নভেম্বরের একটি ফেসবুক পোস্টে দেখা গেছে, গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে নৌকার প্রতিকৃতি তুলে দিচ্ছেন আবেদ আলী ও ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাসহ অন্যান্যরা।
সংস্থাটির ফেসবুক পেজে গত ২৫ সেপ্টেম্বর একটি পোস্ট করা হয়। সেখানে আবেদ আলীর ভাষ্য, “সরকারের অধীনেই সকল ধরণের সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। সময়ের সাথে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়।
আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়ারও পরিবর্তন হয়েছে। তার মানে এই নয় যে, পরিবর্তন হলে আমরা মেনে নিতে পারবো না। যে পরিবর্তন আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে সহায়ক, সে নিয়মকে, পরিবর্তনকে স্বাগত জানাই।
এ সরকারের নির্বাচন কমিশন ছোট বড় ৬ হাজার নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেছে। প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হোক। ইতোমধ্যে তাদের নির্বাচন পরিচালনার দক্ষতা আমাদের বিশ্বাস করতে বাধ্য করে।”
ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া অফিসের ঠিকানা ও ফোন নাম্বার অনুযায়ী চলল অনুসন্ধান। টিএন্ডটি-র নম্বরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চেষ্টা চললো, কিন্তু কেউ ফোন ধরলেন না। ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া কার্যালয়ের ঠিকানার (প্লট-৭, রোড-৪/৩, ব্লক-বি, এভিনিউ-১, মিরপুর-১২) উদ্দেশে বের হলাম।
সুত্রঃ দ্যা ডেইলি স্টার
দালাল পর্যবেক্ষকদেরও হাতে রাখতে পারলো না আওয়ামী লীগ
Reviewed by বার্তা কক্ষ
on
January 24, 2019
Rating:
